গ্রামীণ ব্যাংকের সরকারি মালিকানা অংশ ধরে রাখার জন্য ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ। গ্রামীণ ব্যাংকের ২৫ শতাংশের মালিক সরকার। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ রাখা ব্যাংকগুলোর পুনঃপুঁজিকরণ খাত থেকে সম্প্রতি এই অর্থ ছাড় করা হয়েছে। বাজেটে এ খাতে দেড় হাজার কোটি টাকা রাখা আছে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারি অংশীদারিত্ব ২৫ শতাংশ বজায় রাখতে এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ছাড় করা হয়। প্রায় নয় বছর আগে গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী অর্থবিভাগ প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি, দুর্বলতা এবং সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করে। কমিশনের আরও সুপারিশ ছিল, সরকারের অংশীদারিত্ব ৫১ শতাংশ করার এবং ব্যাংকটিকে একাধিক সংস্থায় বিভক্ত করার। তখন ৫০ শতাংশ না করে ২০১৩ সালে সরকারের অংশীদারিত্ব ৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। সূত্র জানায়, চলতি বাজেটে ব্যাংকগুলোয় পুনঃপুঁজিকরণের জন্য ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তহবিল রাখা হয়েছে। কিছু তহবিল ব্যাংকগুলো মূলধন বাড়ানোয় ব্যবহার করা হবে। বিশেষ করে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক এবং অন্যান্য বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে এ টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এই অর্থ থেকেই গ্রামীণ ব্যাংকে ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

২০১১ সালের ১০ মে পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদে দায়িত্ব পালন করেন গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এমডির বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ায় ২০১১ সালের ১১ মে তিনি সরে যান। গত বছর নভেম্বর গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. সাইফুল মজিদ গণমাধ্যমকে জানান, ব্যাংকের ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার এবং বাকি ৭৫ শতাংশ শেয়ার সদস্যদের। ২০২২ সালে ব্যাংকটি সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সূচকে অগ্রগতির সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যসংখ্যা এক কোটির মাইলফলক অতিক্রম করেছে। বিশ্বের অন্য কোনো ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার এত সদস্য নেই।

গ্রামীণ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট আমানত দাঁড়ায় ২৩ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকায়। ২০২০ সালে মহামারির সময় ব্যাংকটি ৪৮১ কোটি টাকা মুনাফা করে।ড. ইউনূসের ‘গ্রামীণ নারী আর্থিক জীবনের উন্নয়ন’ প্রকল্পটিকে ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বরে সরকার গ্রামীণ ব্যাংক নামে একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়। অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। প্রতিটি ১০০ টাকার সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত। ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ছিল ৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ ঋণগ্রহীতারা এবং বাকিটা সরকার ও সরকারি মালিকানাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কিনে নিয়েছিল।